প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় ( বর্ধমান ) : ব্যাঙ্ক গ্রাহকের মোটর বাইকের ‘টুল বক্স’ ভেঙে মোটা টাকা ছিনতাই করে নিয়ে পালানোর সময়ে পুলিশের হাতে ধরাপড়লো ভিন রাজ্যের দুই দাগী দুস্কৃতি।ধৃতদের নাম আউল সোম ও রাণা আউল প্রধান। এদের মধ্যে আউলের বাড়ি ওড়িশার গঞ্জাম জেলার আসকা (ASKA) থানার ডোমকুনি সাহাপুর এলাকায় ।অপর ধৃত রাণার বাড়ি ওড়িশার জয়পুর জেলার কোরাই (kORAI)থানার পূর্বকোটে (purbakote) এলাকায় । পূর্ব বর্ধমানের জামালপুর থানার পুলিশের ’নাকা’ চেকিংয়ে ধরা পড়েযায় ওড়িশা রাজ্যের এই দুই কুখ্যাত দুস্কৃতি। তাঁদের কাছ থেকেই উদ্ধার হয় ছিনতাই হওয়া টাকা । থানায় পুলিশের ম্যারাথন জিজ্ঞাসাবাদে ধৃতদের সম্পর্কে উঠে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য। যা জেনে কার্যতই স্তম্ভিত জেলা পুলিশের কর্তারা । পুলিশ জানিয়েছে, খণ্ডঘোষের কৈয়ড় গ্রামে বাড়ি যুবক শৈলেন মুখোপাধ্যায়ের। রায়নার সেহেরাবাজারের একটি রাস্ট্রায়াত্ব ব্যাঙ্ক থেকে মোটা টাকা তুলে তিনি
তাঁর মোটর বাইের টুল বক্সে রাখেন ।এর পর তিনি তাঁর বাইকে চেপে ব্যাঙ্ক থেকে কিছুটা দূরে একটি দোকানের সামনে বাইকটি দাঁড় করিয়ে দোকানে ঢোকেন।ওই সময়ে কয়েক মুহুর্তের মধ্যে শৈলেন মুখোপাধ্যায়ের ওই বাইকের টুলবক্স ভেঙে টাকা নিয়ে দুই দুস্কৃতি তাঁদের নীল রঙের বাইকে চেপে দ্রুত পালিয়ে যায় ।এই ঘটনা দেখার পরেই ওই দোকানের সামনে থাকা লোকজন চিৎকার চেঁচামেচি শুরু করেন । তখনই শৈলেন বাবু দোকান থেকে বাইরে বেরিয়ে এসে দেখেন তাঁর মোটর বাইকের টুলবক্স ভাঙা । টুল বক্সে টাকা নেই । তারই মধ্যে সেখানকার অনেকে নীল রঙের বাইকে চেপে পালানো দুস্কৃতিদের পিছু ধাওয়া করে ।কয়েকজন রায়না থানার পুলিশকেও ঘটনা বিষয়ে জানায়।সেই খবর পেয়েই নড়ে চড়ে বসে রায়না ও জামালপুর থানার পুলিশ ।এসডিপিও (বর্ধমান দক্ষিণ) আমিনুল ইসলাম খান বলেন, “খবর পাওয়া মাত্র বিভিন্ন থানাকে সতর্ক করে দেওয়া হয়। সেহেরাবাজার থেকে জামালপুর যাওয়ার পথে রায়না ও জামালপুরে বিভিন্ন পয়েন্টে পুলিশের ‘নাকা’ শুরু হয়। নীল বাইকে চেপে থাকা দুই দুস্কৃতি সেহারাবাজার থেকে পালিয়ে যেতে সক্ষম হলেও জামালপুরের কাড়ালাঘাট এলাকায় তাঁরা ধরা পড়ে যায়।ছিনতাই হওয়া টাকাও তাঁদের কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে” । পুলিশ ওই দুই দুস্কৃতিকে গ্রেপ্তার করার পাশাপাশি তাঁদের নম্বরবিহীন নতুন মোটরবাইকটি বাজেয়াপ্ত করেছে। শৈলেন মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন ,“এক মিনিটেরও কম সময়ের মধ্যে অপারেশন চালিয়ে দুস্কৃতিরা তাঁর বাইকের টুলবক্স ভেঙে ৭৫ হাজার টাকা নিয়ে পালিয়ে যায় ।পুলিশ দ্রুত তৎপর হওয়াতেই দুস্কৃতিরা ওই টাকা সহ ধরা পড়েছে“।
ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জানতে পেরেছে, ধৃতরা মূলত ওড়িশা, বিহার ও বাংলায় অপরাধ ‘চক্র’ চালায়। তাঁরা ওড়িয়া, ছাড়াও হিন্দি ও বাংলা ভাষায় সাবলিল ভাবে কথা বলতে পারে। ধৃতদের বিরুদ্ধে পূর্ব মেদিনীপুরের দু’টি থানাতে জাল নোট পাচারে অভিযোগ রয়েছে।তাঁরা কিছুদিন আগে গঞ্জাম এলাকায় ২ লক্ষ টাকা ছিনতাই করে পূর্ব মেদিনীপুরে চলে আসে। সেখানে ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা দিয়ে এই নীল মোটরবাইকটি তাঁরা কেনে।সেই মোটরবাইক নিয়ে কলকাতাতে বেশ কিছুদিন ঘুরে তাঁরা পূর্ব বর্ধমান জেলায় এসে বিভিণ্ন জায়গায় ঘুরে ‘রেইকি’ করে যাচ্ছিল। কিছুদিন আগে, বর্ধমান শহরের বাদামতলায় এক চাল ব্যবসায়ীর টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। পুলিশ এখনও সেই ঘটনার কিনারা করতে পারেনি ।শহর বর্ধমানে ওই চাল ব্যবসায়ীর টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনায় জামালপুরে ধৃত দুষ্কৃতীরা জড়িত কিনা তাও পুলিশ খতিয়ে দেখছে । এসডিপিও আমিনুল ইসলাম খান জানিয়েছেন , “ধৃতদের নামে আর কি কি মামলা রয়েছে তার তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। তদন্তের প্রয়োজনে ধৃতদের আরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। ।